Jibansmriti Archive

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি ও কবিতা । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র : ১

জলের রঙ লাল। পানা পুকুরে ঢিল। ছড়িয়ে গেল জল। ডুব…ডুব…ডুব… গভীরতর ডুব। ডুবে যাচ্ছে ঢিল, না মন? ঘূর্ণি। অবরোহন। শিশু বয়স। ছুটে ক্লান্ত ঘুম। সবুজ সবুজ রঙ। সাঁওতালী স্নেহ পরশ। ঘূর্ণিপাক। অবরোহন। ছোটবেলা। ঘুমিয়ে পড়া। স্বপ্ন। পার্থিব ও অপার্থিব জগত। সত্যি জন্মাবার বয়স। কখন যে কালো ঘুরন চলে আসে, ঘুরপাক খায়। অবরোহন। নীল দাগ। ঘুরন। ডুব। আবার অবরোহন। ইতস্তত যাপনের বৈভবি হলুদ। তর্ক। মিথ্যার জন্মগ্রহণ। কোলাহল। কালো কালো কালো ক্রমশ খয়াটে,  কিন্তু ছড়িয়ে থাকে। তরঙ্গের দহ সময়ের নির্বাক গণ্ডি। নির্বাক? ওই যে টুপ। আঘাত। ঘর্ষণ। সে তো শব্দ। ঘূর্ণণের বিচ্ছুরণে সুখ শোক ভোগ যোগ অঙ্ক কথা বিষাদের মতো অজস্র যাপন বিচ্ছুরিত হতে থাকে। কেন্দ্রে থাকে সেই ছুঁড়ে দেওয়া ঢিল। ঢিল? মন? ভ্রুণ? এই আবর্তনের কেন্দ্রস্থল কোথায়? কেন্দ্রভূমি তার কেন্দ্রস্থল তার কেন্দ্র

কে?

কী?

কেন?

কবে?

কোথায়? কেন্দ্র

অভিমুখ রচিত হবার পূর্ব নির্মাণের ভিত্তিস্থল এক কুয়োতলায়। সেই আবর্তনের জন্য চক্র। চক্রের সাথে ঝোলানো অস্পষ্ট দড়ি। ভূগর্ভস্থ  থেকে অর্জন করা জল। অর্জন না নিবারণ? এই তো সেই ঘুমিয়ে পড়ার মাটির আঁচল। নৃত্য ভঙ্গিমায় কেশ থেকে জল ঝরে পড়ে দুই বাহুতে ধরা প্রসারিত কাপড়ে।  জল ঝরে? না ছোট ছোট শিশির বিন্দুর মতো ছোট ছোট পাখি উড়ে যায় শূন্য ক্যানভাসে? স্বপ্নের উড়ান। পাখি ওড়ে, ঠিক যেমন ‘পতঙ’ ওড়ে। কিন্তু ঘুড়ি ওড়াতে হয়।  আকাশ জুড়ে লম্বা লেজের ঘুড়ি পতপত করে উড়তে থাকে বিপরীত বায়ু চাপে যা ক্রমাগত সৃষ্টি করে কিশোর দলের ছুটন্ত গতি। এই দৌড় প্রথমে দৌড় তারপর আরো জোরে দৌড় তারপর দুরন্ত দৌড় সে এমন একটা আশ্চর্য ম্যাজিক দৌড় যে দুই পা যেন ওই ঘুড়ির মতো ওই পাখির ডানার মতো উড়তে থাকে। প্রাণ। এই প্রাণের রূপ এসেছিল সেই নদী বক্ষ থেকে। যে নদী ছিল এক নিসর্গে যেখানে প্রকৃতির মাঝে প্রাণ কণিকা হয়ে উজ্জ্বল ছিল কালো রঙের নৌকোর গলুই।

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

নদীর বুকে নৌকো। বাঁধা নয় ছাড়া। ক্ষীণ গলুই-এর ছায়া জলে। কুয়োর জল। চক্র। দড়ি। ছপাৎ। ডুব। ঢিল। ঘূর্ণি। আবর্তন। অবরোহন। ক্রমাগত অবরোহন। এইবার হবে অনিবার্যতার বিস্ফোরণ। মৃদঙ্গের ধ্বনিতে সেই বৈভবি হলুদ সেই ভ্রুণ সেই প্রাণ সেই কথোপকথন বিস্ফারিত হয়ে গেল; মননের অভ্যাসের ক্যানভাস ছিঁড়ে রচিত হল অচেনা…নতুন…

হিরণ মিত্র— এই সময়ের ভারতীয় চিত্রকলায় বিমূর্ত চর্চায় একজন অন্যতম প্রধান শিল্পী। জন্ম স্বাধীনতা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিমণ্ডলকে সাক্ষী রেখে উনিশশো পঁয়তাল্লিশ সালে। দেশভাগ দাঙ্গা ভয় রুখে দাঁড়ানো সৃজন মনস্কতা মিছিল— এই প্রজন্মের চিন্তার কয়েকটি প্রধান উপকরণ ও শিল্পীর পরবর্তীকালের রেখা সমষ্টির ভিত। মননের এক ঐতিহাসিক ধারা বহন করেছে এই সময়ের শিল্পীরা, যেখান থেকে মৌলিক হয়ে উঠেছে এক একজন, যাঁদের অন্যতম হিরণ মিত্র। চিত্র শিল্পে শিক্ষিত হিরণ গত শতাব্দীর ছয়ের দশক থেকেই নাট্য মঞ্চ তৈরি করতে অনন্য ধারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কবিতা গদ্য উপন্যাস বা প্রবন্ধ— সাহিত্য সম্বন্ধীয় বই-এর প্রচ্ছদ ও অলংকরণ শিল্পের বিষয়-আশয় আলোচিত হলে যে প্রশ্নটি সর্বাগ্রে উত্থাপিত হয়— হিরণ মিত্র এই ব্যাপারে কেমন কাজ করেছেন! তাঁর বিচরণ এতটাই ব্যাপ্ত। তিনি কোথায় অন্য রকম? দশকের পর দশক। গত পঞ্চাশ বছরের নতুন নতুন অক্ষর আবিস্কার ও সেই নিয়ে চর্চার অক্লান্ত ও অদম্য কাজ করে চলেছেন হিরণ নিজের সাথে ক্যানভাসের সাথে তুলির সহযোগে। ক্যালিগ্রাফি হয়ত এই কাজের নাম হতে পারে কিন্তু এর বিশিষ্টতা অন্য জায়গায়। উদাহরণস্বরূপ ‘ল’ রূপান্তরিত হল পাখির মতো বা ‘আকার’ (‘া’) যেন একটা কলম— ঠিক এইভাবে সরলীকরণ ব্যাপারটা নয়। তাঁর কাজ নতুন এক দিগদর্শন। শ্রবণকেও যে রূপ দেওয়া যায় অনুবাদ করা যায় দৃশ্যে সেই যাত্রাপথের একাধারে একাকী সৃষ্টিকর্তা, নির্মাণ শিল্পী ও চিন্তকের আধার হিরণ মিত্র। তাঁর এই অন্বেষাকে পনের মিনিটের একটি তথ্য নির্ভর ও তাঁর ভাবনা তত্ত্ব সমৃদ্ধ সাক্ষী-চিত্র তৈরি করেছেন পরিচালক অরিন্দম সাহা সরদার।

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

শ্রবণের চিত্ররূপ চলন অনুযায়ী তিনটি স্তরে বিভক্ত ভাবা যেতে পারে। যদিও এইভাবে কোন পরিধি নির্দিষ্ট নেই এবং সেটাই চলচ্চিত্রের গঠন বৈশিষ্ট্য। প্রথমে ভূমিকা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, দ্বিতীয় স্তরে বিমূর্ত পথের মুখ ও অভিগমন এবং তৃতীয় স্তরে শিল্পীর নিজস্ব একক কথন ও শিল্পীর চিত্রলিপির কিছু নিদর্শন। এক্কেবারে শুরুতে আবহ সঙ্গীতে আলাপের মেজাজে পর্দা জুড়ে ব্যাপ্ত সাদা ক্যানভাস। শুধুমাত্র নিচে রেলিঙ-এর গ্রিলের মতো ছোট ছোট আঁকাবাঁকা কালো রেখা। রেখা সমূহ প্রথমে স্পষ্ট তারপর অস্পষ্ট তারপর আবার স্পষ্ট— এক উত্তরণ অবতরণের ঢেউ-এর ভাবনা প্রযুক্ত করে। পরের কয়েকটি শট কয়েকটি স্থির ছবির পর পর প্রদর্শনী। মূলত কলকাতার স্বরূপ; বড় নগরের স্বরূপ উদঘাটিত হয় কয়েকটা প্রতিনিধি স্থানীয় ছবি দিয়ে। হিরন মিত্রের হীরক হয়ে ওঠার সময় কেটেছে কলকাতার অলি গলি রাজপথ নিসর্গ ইতিহাস ল্যাম্পপোস্ট বিদ্যুতের তার ও তারের ফাঁক গলে দেখা আকাশের শামিয়ানায় আর ছোটোবেলা কেটেছে কাঁসাই নদীর তীরের গ্রাম বাংলায়। চিত্রের স্বগত বৈশিষ্ট্য নির্মাণের অন্যতম ভিত্তি যে শিল্পীর চৌহদ্দি সে কথা অনস্বীকার্য তাই প্রথম অংশে পরিচালকের এই শহরের পরিবেশের একটা রূপরেখার পরিকল্পনা যৌক্তিক।

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

হিরণ মিত্র রচিত বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে এই চলচ্চিত্রটির পূর্বে। মূলত ছবি কথা ও তাদের পরিচিতি। বই-এর নামগুলো পড়লে বইগুলি সম্বন্ধে একটা ধারণা করা যায়— ‘আমার ছবি-লেখা’, ‘মুখ-মুখর’, ‘ফিল্ম গ্রাফিক্স’, ‘আরবানিয়া’ ও ‘শ্যাডো’। পরিচালক অরিন্দম শিল্পী হিরণের বিমূর্তের সমুদ্রে যাবার আগে রাস্তা তৈরি করেন তাঁর আঁকা কয়েকটি ছবি ও তার রেখাঙ্কনের শব্দ সমাহার দেখিয়ে। নদী ধরে হাঁটলে এক সময় মোহনার দেখা পাওয়া যায়— অনেকটা এই রকম ভাবনা থেকেই পরিচালকের এই অংশের  প্রযোজনার উদ্দেশ্য। সিনেমার একটা লং শট বা দীর্ঘ শট যদি আস্তে আস্তে মিডিয়াম বা ছোট শটের দিকে না যায় শুধুমাত্র লং শটে সম্ভবত পরিচালকের বক্তব্য শিথিল হয় বা বলা যায় একটু নেতিবাচক হয়ে পড়ে। ঠিক সে রকম একটা সুন্দর দৃশ্যে প্রাণের খোঁজ না থাকলে তা অচিরে আগ্রহ হারায়। রেলের পাটাতন দিব্য ছিল সুন্দর সাজানো কিন্তু তাতে প্রাণ সঞ্চার হল হিরণের তুলি দিয়ে বৃষ্টির জলে। পাটাতন বা রেলিঙ যাই ভাবা হোক সে আর শুধু বস্তু থাকল না। কথিত আছে,  স্বভাব স্বকীয়তা ও পরম্পরার তিন গুণের সমাহারে ও নিরন্তর চর্চায় যে শিল্পী সিদ্ধিলাভ করেছেন, তাঁর মনেতেই ছবি আঁকা হয়ে আছে। রঙ আধার থাকলেই প্রকাশিত হবে। গল্পে আছে, চীনা শিল্পী ছবি আঁকতে আঁকতে রঙের ডিব্বা উলটে গেলে সেই পড়ে যাওয়া রঙ হাত বুলিয়ে হাত বুলিয়েই এঁকে ফেলেন আশ্চর্য এক ড্রাগন। বাস্তবিক ঠিক এই ধরনের একটি কালির দোয়াত উলটানো অনুষঙ্গের প্রকাশ হিরণের একটি ছবিতে আছে যা পরিচালক অরিন্দম শ্রবণের চিত্ররূপের পর্দায় ধরে থাকেন কিছুক্ষণ। দর্শকের চোখ আরামের জন্য। কারণ নান্দনিক। আবার সাথে সাথে চোখকে ব্যতিব্যস্ত করবার জন্যেও ধরে থাকেন। একই ছবিতে রেখা ও লেখার পর হিরণ একটা প্রশ্ন করেন-‘ছবি কি বলে একে?’ শিল্পের চিরকাল জয় হয়েছে প্রশ্নের পথে,  সবকিছু সুতো বেঁধে সমাধান করে নয়। তাই হিরণের এই দ্বন্দ্ব দর্শকের চঞ্চলতা আনে আর এই উদ্দেশে পরিচালকের ক্যামেরা যেন আঁজলা হয়ে অপেক্ষা।

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

শিল্পীর এই মনই সব। ছন্দে রসে প্রস্তুতিতে অভিজ্ঞতায় নির্মাণ বিনির্মাণে অভিগমনের একটা মন যা ছবি প্রকাশের সাথে সাথে দর্শকের মনকেও নিবিড়তার মধ্যে নিয়ে যেতে চায়। শ্রবণের চিত্ররূপে একক কথনে শিল্পী হিরণ এই মনের ভূমিকাকে চিত্র বুঝবার জানবার রসগ্রহণের প্রায় একচ্ছত্র অধিপতি রূপে বিবেচনায় আনেন। আনবেন নাই বা কেন? এ ছাড়া যে অন্য পথ নেই। মনই মার্গ। হিরণের জন্মের চার বছর আগে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ছবি নিয়ে তোলপাড় হওয়া জগতের উদ্দেশে রবীন্দ্রনাথের কথন ছিল এই রকম— ‘আমার ছবিও যেমন নীরব, আমিও তাই। ব্যক্ত করাই তো ওদের কাজ, ব্যাখ্যা করা নয়’। এই কথা কী আমাদের তাঁর সেই বিখ্যাত উক্তি স্মৃতিতে আনে না?— ‘এ বোঝার নয়, বাজবার’। আর এক শিল্পী নন্দলাল বসু যখন মারা গেলেন হিরণের বয়স একুশ। নন্দলাল বসুও এই মনকে শিল্পের বিশেষত চিত্র শিল্পের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলেছেন এইভাবে— ‘শিল্পীর চোখ তো শিল্পী নয়, মনই শিল্পী। শিল্পের রসগ্রহণও চোখ দিয়ে নয়, মন দিয়ে’। শিল্পী হিরণ মিত্র বললেন— ‘আমার বিমূর্ততার কাজ মনের সহযোগিতায় দেখলে মনকে বুঝলে এর (ছবির) সাথে কথা বলা যাবে বা বোঝা যাবে এখানে মনটাই সব’। প্রকৃতপক্ষে হিরণের বিমূর্ত ছবি নিজেকে যেমন মেলে ধরা তেমনি বিভ্রান্ত করা। সংশয় আর সমাধান নিয়ে উলোটপালট করা। একক কথনে অকপটে বলেন এ অক্ষর অপাঠ্য। পাশাপাশি তা যে বোঝার অতীত নয় এই কথাটি স্মরণ করাতে ভোলেন না অপিচ ছায়া আবছায়ার এক নিরন্তর পরিক্রমা।

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

গদ্য কবিতার সৃষ্টি করে কবিতার ভিত্তিটাকেই যখন বদলে দিলেন ব্যোদলের, জীবিতকালে তা দেখে যেতে না পারলেও এই সৃষ্টির জন্য এখন তাঁর এক ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠা। এই গদ্য কবিতার আঙ্গিকে লেখা জীবনানন্দের কবিতা আবার এক অন্য সৃষ্টি পথের উল্লাস যা পাঠক একেবারে মৌলিক ও নতুন রস সমৃদ্ধ কবিতা হিসেবে বিচার করেছে ভালোবেসেছে আলচনা করেছে। ঠিক সেই রকম বিমূর্ত ভাবনার চিত্রকলার ইতিহাস হয়ত একশ বছর পুরানো কিন্তু শিল্পী হিরণ যখন শ্রবণকে দৃশ্যমান করতে যান অক্ষরের আবিস্কার করতে যান ধ্বনির অনুবাদ করতে যান তখন তিনি একাকী। লক্ষ্যের খোঁজে একা তপস্বী। এই একাকীত্ব বন্ধুহীনতা বা আত্মীয়হীনতা নয়, এ হল নির্জনতা। এই নির্জনতাকে ধরবার জন্য শিল্পীর মাথার পেছনে পরিচালক অরিন্দম ক্যামেরাটি ধরেন। এর ফলে শিল্পীর কাছেও চলে এলেন দর্শক। সাদা কাগজ আর তুলির যে সংযোজন তার সাক্ষী হয়ে গেলেন এই সাক্ষী চিত্রে। তার পর আরো ক্লোজ শট। ক্যামেরা যেন উপুর হয়ে শুয়ে আছে। পর্দায় শুধুমাত্র সাদা কাগজের উপর সৃষ্টি হতে থাকে একের পর এক বিমূর্ত ভাবনার সংকেত কখনও মানুষের মুখ কিন্তু সে মুখ নয়; তার চারপাশে বিন্দু বিন্দু চিন্তা রাশি ঢাকা এক অজস্র বিন্দুর সমাহার; কখনও খোঁপা বাঁধা বা মাথায় ফেট্টি কারুর বসে পড়ার মতো ভঙ্গি পরক্ষণেই তার পাশে আকার চিহ্ন অন্য ভুবনে আছড়ে পড়তে হয়— এমন কত কী শিল্পী এঁকে চলেন আর দর্শক এক এক ছবি পূর্ণ হয় আর তার সাক্ষী থাকেন চিন্তা করেন তাতে ডুব দেন। ডুব…

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

ছবিতে সাক্ষর সে কি গানের নোট কিছুটা কড়ি আর কিছুটা কোমলের কীসে যে ডুবে থাকে ষোলটা মাত্রা কী ওই যে গোল গোল বহিরজগতের যেমন গবাক্ষ একটাই ছবিতে নিচেতে শিলালিপি কিঙবা এগুলো কি কোলাহল প্রিয়তা ভালোবেসে বসেছে পরপর পুড়ছে শ্যাওলার রঙেতে পাশাপাশি অতীত ও বর্তমানের না এ কোন অতল সরলতায় ভিজে চুপ্পুস ছাতার উলটানো বাটের মতো সঙ্গীতের স্বরচিহ্ন আঁকা যা দেখে মনেতে ভ্রম হয় যেন এ খণ্ড ত এরই বিভঙ্গ মূর্তি অথবা ওই এক উঁচু নাগালেরও উঁচু উচ্চতাতে চিন্তার বন্দী মুক্তি পেতে পারে যেমন করে মুক্তমনা প্রথম থেকে প্রতিজ্ঞাতে পেলব ঋজু গাছের মতো সময় যেন ফসিল করে ধ্বংস করে ধূসর করে ছিদ্র করে রঙ পালটানো ঠিক যেন এক মনের কথার মনের ব্যথার কোলাহলের ও আঘাত হানার আঘাত পাবার যন্ত্রণাতে মনের ধ্বনির অনুবাদ এক চোখের সামনে দহর মাঝে লম্বা মতো মাদুর গাছে ফুল ফুটেছে ছোট্ট শিশু পলক ছাড়া দেখতে থাকে কেমন করে ফুলের রেনু তুলোর মতো ছিন্ন হয়ে উড়তে থাকে ছুটতে থাকে শিশুর মনে লম্বা দাগে বয়সকালে গাছের মত মনের ধ্বনি আঁকতে থাকে ফুলের রেণু কান্না হয়ে জলের মতো ঝড়তে থাকে ‘যেতে যেতে একলা পথে মম চিত্তে নিতি নৃত্যে নাচে জন্ম নাচে মৃত্যু নতুন পথের বার্তা কবে’ সেই নদীটা একলা হয়ে যাত্রাপথে পর্দা জুড়ে হিরন হাতে আলো পড়ছে প্রবল আলো বিচ্ছুরণে

ডুব

টুপ

তরঙ্গ

হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি । তথ্যচিত্রের একটি স্থিরচিত্র :

কথাচিত্রের লিংক : https://youtu.be/BwKcj2EpEcA

জীবনস্মৃতি আর্কাইভ ব্লগ

যুগ্ম সম্পাদক অরিন্দম সাহা সরদার (অবেক্ষক এবং সভাপতি, জীবনস্মৃতি আর্কাইভ ) এবং বিয়াস ঘোষ (সম্পাদক, জীবনস্মৃতি আর্কাইভ)

প্রধান সহযোগী সম্পাদক : মৌমিতা পাল

সহযোগী সম্পাদক মণ্ডলী : প্রমিতি রায় । অঙ্কুশ দাস । সুজাতা সাহা

হিরণ মিত্রের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ প্রকাশ – ৪ । ১১ জুলাই ২০২৫

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *