Jibansmriti Archive

সুচেতনা ভট্টাচার্য্য

কিছু শিল্পীর সুর এমনভাবে হৃদয় স্পর্শ করে যে সেই সুর থেমে যাওয়ার পরেও তার প্রভাব থেকে যায় ইতিহাসের পাতায়। অথচ অনেক সময় সেই শিল্পীর নাম ধীরে ধীরে ভুলে যাওয়া হয়, কিংবা  ইচ্ছাকৃতভাবে ভুলিয়ে দেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতের কাছে তারা অদৃশ্য হয়ে যান। এমনই একটি সাংস্কৃতিক রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন সরোদশিল্পী পণ্ডিত যতীন ভট্টাচার্য (১৯২৬–২০১৬)। তিনি ছিলেন সেনিয়া বীণকার রবাবীয়া ঘরানার একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতসাধক, এক নীরব আলোকবর্তিকা, যাঁর অবদান আজও যথার্থভাবে স্বীকৃতি পায়নি।

পণ্ডিত যতীন ভট্টাচার্য (১৯২৫-২০১৬)সাক্ষীচিত্রের স্টিল ছবি – এক

পণ্ডিত যতীন ভট্টাচার্যের জন্ম হয়েছিল বেনারসে, ১৯২৬ সালে। তিনি বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করেন। জীবনের নানা বাঁক তাকে মাইহারে নিয়ে যায় উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-এর কাছে, যেখানে তিনি সাত বছর ধরে তালিম নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছিলেন গুরুর কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা এবং ঘরানার ঐতিহ্য বহন করার কাজে। তাঁর জ্ঞান ও সঙ্গীত ভাবনা এক অমূল্য দলিল হয়ে উঠতে পারত, যদি না তাঁকে সঙ্গীত ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলার এই সচেতন প্রয়াস করা হতো।

এই বিস্মৃত সরোদশিল্পীকে নতুন করে সকলের সামনে তুলে ধরেছেন ডকুমেন্টারি নির্মাতা অরিন্দম সাহা সরদার।  যতীন ভট্টাচার্যকে ঘিরে তৈরি হওয়া নানা মিথকে খণ্ডন করাই ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া এই ডকুমেন্টারির মূল উদ্দেশ্য। এই প্রবন্ধে আমি এই ডকুমেন্টারিটিকে একটি সাক্ষীচিত্র হিসেবে উল্লেখ করছি, কারণ এর নির্মাতা নিজেকে সত্যের খোঁজে একজন সাক্ষী হিসেবেই  সামনে এনেছেন। তাঁর কথায়, যাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, যেসব তথ্য তিনি সংগ্রহ করেছেন, সব কিছুর প্রত্যক্ষ সাক্ষী তিনি নিজেই।

সাক্ষীচিত্রের স্টিল ছবি – দুই

এই সাক্ষীচিত্রের নাম “যদি সত্যি কথা বলো” । এই নামটি শুনে প্রথমেই প্রশ্ন জাগে, এই প্রকারের নামকরণ কেন? এখানে ‘যদি’ শব্দটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি ঘোষণা নয়, বরং একটি প্রশ্নের ইঙ্গিত দেয়। আমরা কি সত্যি কথা বলতে পারি, নাকি বলার সাহস রাখি? যেই সত্যকে সকলের সামনে প্রকাশ করা কামনীয় নয়, আমরা কি সেই সত্যকে প্রশ্ন করতে চাই? এই নামকরণে একটা অসম্পূর্ণতা আছে। যদি সত্য কথা বলো, তাহলে কী হবে? এই প্রশ্নগুলো নামটি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে। এই নাম কেবল একটি শৈল্পিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি যতীন ভট্টাচার্যের জীবনের দর্শনের সঙ্গে জড়িত। তাঁর শিষ্য জয়ন্ত রায় এই ডকুমেন্টারিতে বলেন, গুরুজিকে বলা হয়েছিল বিতর্কিত কিছু না বলতে। ‘বিতর্কিত’ বলতে যা যতীন ভট্টাচার্যের কাছে ‘সত্য’ বলে মনে হয়েছিল। তাঁর লেখা বই “উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ও আমরা” একসময় বিতর্কিত বলে গণ্য হয় এবং তাঁকে মিথ্যাবাদী হিসেবে প্রচার করা হয়। কিন্তু নিজের সত্যে তিনি এতটাই স্থির ছিলেন যে তা তাঁকে পুরো কেরিয়ার হারানোর দিকে ঠেলে দেয়। তিনি শুধু খ্যাতি হারাননি, বরং পরিবার নিয়ে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যেও দিন কাটান। এই ডকুমেন্টারিতে তথ্যপ্রমাণসহ দেখানো হয়েছে, যাঁকে মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল, তিনি কখনও মিথ্যার সঙ্গে আপোষ করেননি। এই সত্য তাঁকে জীবনের কঠিন পথে নিয়ে গেছে এবং তাঁকে অনেকের চোখে অপ্রিয় করে তুলেছে। তাই এই নামকরণ শুধু তাঁর জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এটি আমাদেরও শেখায় কীভাবে সত্যের মুখোমুখি হতে হয়। আমরা কি প্রস্তুত আছি সেই সত্যের মুখোমুখি হতে? এই প্রশ্নেই ‘যদি’ শব্দটি এতটা অর্থবহ।

সাক্ষীচিত্রের পোস্টার – এক

ডকুমেন্টারির শুরুতেই শোনা যায় একটি পরিচিত গানের অংশ, পঙ্কজ মল্লিকের গাওয়া ‘পিয়া মিলন কো যানা’ । যতীন ভট্টাচার্য যখন সাত বা আট বছরের, তখন তিনি এই গানটি শুনে হারমোনিয়াম বাজাতে শেখার আগেই পুরো সুরটি নিখুঁতভাবে যন্ত্রে বাজিয়ে ফেলেছিলেন। এই ঘটনাকে মনে রেখেই হয়তো নির্মাতা গানটি ব্যবহার করেছেন। তবে এটি এমনভাবেও ব্যাখ্যা করা যায় যে গানটি দর্শককে মুহূর্তে নিয়ে যায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, যা এক ধরনের স্মৃতিময় আবেগ তৈরি করে। মনে হয়, শিল্পীর গল্প শোনার আগে যেন আমাদের মনে একটুখানি জানলা খোলা হয়, যেখানে আমরা তাঁর সময়ের একটি প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই।

তবে এই স্মৃতিময়তার রেশ খুব বেশি সময় স্থায়ী থাকে না। গানটি পুরো শুরু হওয়ার আগেই হঠাৎ থেমে যায়। এই থেমে যাওয়ায় শুধু একটি পরিচিত সুরই হারিয়ে যায় না, হারিয়ে যায় একধরনের শ্রবণ-সান্ত্বনাও। শ্রোতার অভ্যস্ততা ও আরামের জায়গাটি যেন হঠাৎ কেঁপে ওঠে। এই থেমে যাওয়াটা আসলে নিষ্ক্রিয় নয়, এটি একটি নাটকীয় সক্রিয়তা, যা দর্শকের মনে অস্থিরতা তৈরি করে।

এই মুহূর্তে প্রবেশ করে এক ধরনের গাঢ়, নিচু স্বরের সাসপেন্সপূর্ণ টোন। এই টোনটি খুব সুরবদ্ধ নয়, বরং  চাপা এবং দ্বিধাগ্রস্ত। এই সাউন্ড নিজেই একটি ভারী আবহ তৈরি করে, যা দর্শককে একটি অনিশ্চিত অবস্থানে ফেলে দেয়। যেন এক ধরনের শব্দময় কুয়াশা, যেখানে কিছুই স্পষ্ট নয়, কিন্তু অস্বস্তি প্রবল।

সাক্ষীচিত্রের স্টিল ছবি – তিন

এই  টোনটি যেভাবে একটানা, টানটান এবং নীচু, তাতে কোনও ছন্দ নেই, কোনও নির্দিষ্ট গতি নেই। যেন এক  হিমস্রোত বইছে। এই শব্দের স্থিরতা আর ছায়াময় গঠন শ্রোতার মনে একটি চাপা প্রশ্ন তোলে, যদিও তা সরাসরি বলা হয় না। এই অস্বস্তিকর আবহ জানিয়ে দেয়, আমরা এমন একটি সময় ও ইতিহাসে প্রবেশ করছি যা আরামদায়ক নয়, বরং অস্পষ্ট এবং অপ্রকাশ্য। এখানে শব্দ শুধুই ব্যাকগ্রাউন্ড নয়, সে নিজেই একটি ভাষ্য হয়ে দাঁড়ায়। এই শব্দই আমাদের ডাকে সেই অস্বস্তিকর বাস্তবের সামনে মুখোমুখি হতে।

পরের দৃশ্যে ধীরে ধীরে শোনা যায় প্রজেক্টরের শব্দ আর সাথে যতীন ভট্টাচার্যের একটি পুরনো সাক্ষাৎকার, যেখানে তিনি তাঁর ছোটবেলার কথা বলছেন। এটি যেন একটি দৃশ্যমান প্রতীক—যন্ত্রচালিত স্মৃতি, অসম্পূর্ণ ফিল্ম রিল আর খণ্ডিত ইতিহাসের প্রতিধ্বনি। এই mechanical hum শুনলে মনে হয় আমরা যেন একটি আর্কাইভের মধ্যে আছি, যেখানে সময় থেমে আছে। এই শব্দ কেবল পটভূমি নয়, এটি নিজেই একটি রাজনৈতিক ভাষ্য। সে যেন বলছে, যা দেখা যাচ্ছে তা সম্পূর্ণ নয়, আর যেটুকু শোনা যাচ্ছে, তার বাইরেও অনেক কিছু ঢাকা রয়েছে।

এরপর শুরু হয় মূল অনুসন্ধান। ক্যামেরা ধীরে ধীরে বেনারস ঘাট থেকে ব্যাক আউট করতে করতে আমাদের নিয়ে যায় একটি অনুসন্ধানের যাত্রায়। সেখানে  আমরা দেখতে পাই যতীন ভট্টাচার্যের পুত্র, শিষ্য এবং পরিচিতজনদের সাক্ষাৎকার। ডকুমেন্টারিটি মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে আমরা দেখি তাঁর উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-এর কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা ও তাঁর সংগীতচর্চার নানা দিক নিয়ে আলোচনা। এখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে ধীরে ধীরে মারওয়ার আলাপ বয়ে চলে ইন্টারভিউয়ের মাঝে। এরপর মসৃণভাবে তা পরিবর্তিত হয় তাঁর সৃষ্টি ‘সম্পূর্ণ কানাড়া’ রাগে। সম্ভবত এই রাগ ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর সংগীতশৈলীর বিশেষত্ব তুলে ধরতে। এই প্রথম ভাগকে ধরা যেতে পারে শিল্পীর জীবনের একটি বায়োগ্রাফিকাল ভূমিকা হিসেবে, যাতে দর্শক তাঁর সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।

সাক্ষীচিত্রের স্টিল ছবি – চার

প্রথম ভাগ শেষ হওয়ার পর, দ্বিতীয় ভাগে প্রবেশের আগে শোনা যায় একটি বেলের রিং। হঠাৎ এই রিং বাজানোর কারণ কী? এটি কি আমাদের মনে একটি দাগ কাটার জন্য? এই শব্দ যেন আমাদের সচেতন করে তোলে, জানিয়ে দেয় যে আমরা এবার প্রবেশ করতে চলেছি এক দ্বন্দ্বপূর্ণ ইতিহাসের পর্বে। এবার আর ব্যাকগ্রাউন্ডে সরোদের সুর নেই, বরং আবার আমরা ফিরে আসি সেই গাঢ়, নিচু স্বরের চাপা টোনে। পুনরায় আমাদের মনের ভিতর একটি চাপা অস্বস্তি তৈরী হয়, যা প্রথম পর্বের সরোদের বয়ে যাওয়া ধীর সুরের রেশ থেকে আমাদের বের করে আনে। ক্যামেরা ফোকাস করে একটি হাতে, যেটি আতশকাঁচ দিয়ে যতীন ভট্টাচার্যের বিতর্কিত বই “আলাউদ্দিন খাঁ ও আমরা” পরীক্ষা করছে। এরপর আমরা দেখতে পাই একটি ঘর, যার দেয়ালে লেখা কিছু বক্তব্য। যেমন, “He was a backbiter”, “only slanderous comments in his book” ইত্যাদি। প্রত্যেকটি বক্তব্যে প্রথমে একটি ইতিচিহ্ন ছিল। এখন সেই ইতিচিহ্নগুলিকে ঢেকে তার উপর একটি করে প্রশ্নচিহ্ন বসানো হয়েছে। এই ইতিচিহ্নের উপর প্রশ্নচিহ্ন বসানোর কারণ কি? আতশকাঁচ আর প্রশ্নচিহ্ন হয়তো আমাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে অনুসন্ধানের পথে। কিন্তু এভাবেও দেখা যেতে পারে যে এতদিন যেই বক্তব্যগুলি যতীন ভট্টাচার্যের নামে প্রচার করা হয়েছে সেগুলি এক একটি স্টেটমেন্ট হিসাবে ধরা হত। এখন সেই স্টেটমেন্টকে পর্যবেক্ষনের উদ্দেশেই এই প্রশ্নচিহ্ন। একইসঙ্গে ক্যামেরা ফোকাস করে দেয়ালের মাঝখানে একটি পোস্টারে লেখা আছে ‘conspiracy’। ঠিক তারপরেই আমরা দেখতে পাই শব্দটি দেয়াল থেকে ছিঁড়ে ফেলা হয়। তবে কোন হাত সেটিকে উঠিয়ে দিচ্ছে না। কেবল একটি ছেঁড়ার শব্দ হয় এবং ‘conspiracy’ শব্দটি উধাও হয়ে যায়। আর তারপর স্পষ্ট হয় একটি বালিঘড়ির ছবি, যেখানে এক পাশে বালি ভরা, আর অন্য পাশটি খানিক ভর্তি। মনে হয় ভর্তি হচ্ছে। তাহলে কি এই বালিঘড়ি ইঙ্গিত করে, যে ধরনের প্রচার ওঁর বিরুদ্ধে চালানো হয়েছে তা পরিবর্তনের সময় এসেছে? 

সাক্ষীচিত্রের স্টিল ছবি – পাঁচ

দ্বিতীয় ভাগে আমরা দেখতে পাই তথ্যসহ একটি সত্যের অনুসন্ধান। এখানে যতীন ভট্টাচার্যের শিষ্য এবং পরিচিতজনেরা জানান, কীভাবে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা চালানো হয়েছিল তাঁকে সঙ্গীতের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার। তাঁর বিতর্কিত বইটির প্রথম সংস্করণের পর আর তা প্রকাশ পায়নি। তাঁর ১৯৭২ সালে প্রথম ও শেষ একটি রেকর্ড আর পুনঃপ্রকাশ করা হয়নি এবং অন্য কোনো রেকর্ড সচেষ্টভাবে করতেও দেওয়া হয়নি। কারণ, তিনি আলাউদ্দিন খাঁ-এর কন্যা অন্নপূর্ণা দেবীর বৈবাহিক সমস্যার সময়ে তাঁর পক্ষ নিয়েছিলেন। এই কারণে অন্নপূর্ণা দেবীর প্রাক্তন স্বামী, প্রখ্যাত সেতারবাদক রবিশংকর তাঁর বিরুদ্ধে একটি সফল প্রচার চালান, যাতে তাঁর অনুষ্ঠান পাওয়া, রেকর্ড করা ইত্যাদি কঠিন হয়ে পড়ে। অন্নপূর্ণা দেবীর চিঠি এবং তাঁর ছাত্রদের কিনে নেওয়ার চেষ্টা, এসব তথ্যপ্রমাণসহ এই ডকুমেন্টারিতে তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর ছাত্রছাত্রীদের অর্থের লোভ দেখিয়ে এবং প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যতীন ভট্টাচার্যের থেকে সরিয়ে আনা হল। 

তবুও যতীন ভট্টাচার্য কখনও নিজের নাম বা খ্যাতি রক্ষার জন্য আপোষ করেননি। তাই ডকুমেন্টারির শেষের দিকে আমরা দেখি অন্নপূর্ণা দেবীর লেখা একটি চিঠি, যেখানে তিনি লেখেন, “আমি জানি আপনি বারণ শুনবেন না, তবে অনুরোধ লোকের কাছে আর অপ্রিয় হবেন না।“  তার জবাবে, যতীন ভট্টাচার্য নিজের বইতে লেখেন, “আমি জানি অন্নপূর্ণা দেবী আমার মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী। কিন্তু জীবন যাত্রার শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে আর নট সেজে বিনোদ করতে ভালো লাগে না। তাই এই বইতে বহু অনুত্তরিতের উত্তর দিতে চাই।”

সাক্ষীচিত্রের স্টিল ছবি – ছয়

এই উত্তরের অংশটি আতশকাঁচ দিয়ে স্পষ্টভাবে দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে যেমন ডকুমেন্টারির মূল অনুসন্ধানের রূপরেখা বোঝা যায়, তেমনি বুঝতে পারি যতীন ভট্টাচার্যের সত্যবাদিতার আদর্শ। তবে এই আতশকাঁচ কেবল অনুসন্ধানের প্রতীক নয়। এটি যেন বলে, সত্যকে যদি বেশিদিন  চেপে রাখা হয়, তবে একসময় সেটি দাবানলের মতো জ্বলে ওঠে। যেমনভাবে সূর্যের আলোয় কোনো শুকনো জিনিস আতশকাঁচ দিয়ে ধরলে ধীরে ধীরে তা আগুন ধরে নেয়। যতীন ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রেও এই বিশ্লেষণটি কোথাও সত্যি।  তিনি নিজেও বইটির দ্বিতীয় খণ্ডে কোনো কিছুই ঢাকা রাখেননি। তার সত্যগুলি সকলের সামনে দাবানলের মতই জ্বলে উঠেছে। 

ডকুমেন্টারির শেষে দেখা যায়, দেয়ালে যে জায়গায় “conspiracy” লেখা ছিল, সেখানে এখন একটি হাত এনে বসিয়ে দেয় একটি উক্তি: “Try to be artless, unflattering; not a darling accomplice.” এই লাইনটি যতীন ভট্টাচার্যের জীবনের দর্শনকেই শুধু প্রকাশ করে না, আমাদেরও ভাবায়—আমরা কি এই দর্শন থেকে কিছু শিখতে পারি?

এই ডকুমেন্টারিটি যতীন ভট্টাচার্যের জীবন ও আদর্শকে একটি শক্তিশালী সাক্ষীচিত্রে রূপ দিয়েছে। শব্দ, চিত্র এবং প্রমাণের জটিল বিন্যাসে নির্মাতা এমন এক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন, যা শুধু একজন শিল্পীর নয়, কিন্তু একটি সময়ের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক  রাজনৈতিক দিক। তাই ‘যদি সত্যি কথা বলো’ কেবল একটি নাম নয়, এটি আমাদের নৈতিক প্রশ্নের দরজা খুলে দেয়।  এই ডকুমেন্টারি শুধুই স্মৃতিচারণ নয়, এটি ইতিহাসকে নতুনভাবে পড়ার একটি প্রচেষ্টা, যা আমাদের চেনা ইতিহাসকে প্রশ্ন করতে শেখায়।

সাক্ষীচিত্রের পোস্টার – দুই

সাক্ষীচিত্রের ভিডিও লিঙ্ক : https://youtu.be/0MjU8iBZvQ8

জীবনস্মৃতি আর্কাইভ ব্লগ

যুগ্ম সম্পাদক অরিন্দম সাহা সরদার অবেক্ষক এবং সভাপতি, জীবনস্মৃতি আর্কাইভ । 

বিয়াস ঘোষ সম্পাদক, জীবনস্মৃতি আর্কাইভ ।

প্রধান সহযোগী সম্পাদক : মৌমিতা পাল

সহযোগী সম্পাদক মণ্ডলী : প্রমিতি রায় । অঙ্কুশ দাস । কুণাল গুপ্ত

প্রথম বর্ষ । প্রকাশ – ২ । ২২ জুন ২০২৫

3 Responses

    1. I am also a sarod player I larn sarod with my father Ranjit Singh ji and(maa) sharan Rani ji with Ganda band sagird and very hard practiceing evry time he rimmbaring baba alluddin khan sahb and tell about baba riyaz istyl tell me about ali akbhar khan sahb riyaz istyl tell me you mack riyaz like this 5 year I Leva his house and larn he teache me alp job jhalla maihar istyl I have very nice memories with hem aftar something i larn about taal ustad Aashish Khan sahb very butyfull porsan and guru I leation one time sarod performance pandit joytin da in dhrupad mela very long time before that time I am very yong
      He is finsing tihai like baba istyl nice concert
      I see this documentri film it’s very nice. This film also sapprting sarod players give margdarsan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *