
ডেভিড ডগলাস ডানকান। আলোকচিত্রী। পঞ্চাশের দশকে,পাবলো পিকাসো, সেই স্পেনীয় চিত্রী, প্যারিসে, দীর্ঘকাল বাসা বেঁধেছেন, বিশাল স্টুডিও কিনে হাত পা ছড়িয়ে কাজ করেন। ছবি আঁকেন, ছাপ ছবি করেন, বিশাল মাপের ভাস্কর্য বানান। সঙ্গে শেষতম বান্ধবী যাকে পরে বিয়েও করবেন। সারা জীবন অগুনতি রমনী সঙ্গ করে কিছুটা ক্লান্ত, এবার থামতে চান, তাই তার নাম দিলেন মাডাম জেড। ইংরেজি অক্ষরের শেষ অক্ষর। তার সাথে, তার পাশে, তাকে নিয়ে চলল সাদা ক্যানভাসে আঁচড় টানা।

সদ্য জিলো, ঠিক আগের প্রিয়তম বান্ধবী ছেড়ে চলে গেছেন। এই প্রথম পিকাসোর জীবনে কেউ তাঁকে ত্যাগ করলেন। এ শোক, এ আঘাত, উনি কোনোদিনও ভোলেননি। ঠিক এই সময়ে ডানকান তাঁর কর্মরত অবস্থার ছবি তুলতে চাইলেন। তখনকার এই স্থিরচিত্রের যন্ত্রে ভীষণ আওয়াজ হতো, সাটারের। পিকাসো শর্ত দিলেন সম্পূর্ণ নীরব যন্ত্র যদি আনতে পারো, তবেই অনুমতি দিতে পারি। এক নামী কোম্পানি তা বানিয়েও দিলো। প্রায় পিকাসোর ঘাড়ে উঠে ছবি তোলা হলো, কারণ তখনও জুম লেন্স আবিস্কৃত হয়নি। তার কাহিনিও দীর্ঘ।
পিকাসো এসে বসলেন একটি খাড়াই সাদা ক্যানভাসের সামনে। ইজেলে টাঙানো সেই ক্যানভাস। তেরছা করে, কালো একটি লাইন টানলেন। পাশেই রাখা আছে একটি নারী মুখের ভাস্কর্য। পিকাসো এঁকে চলেছেন। সামনে কোনো মডেল নেই। ডানকান পর পর ছবি তুলে চলেছেন । ওঁর আঙুল থামছে না। স্তব্ধ সময়, স্টুডিও। কোথাও কোনো আওয়াজ নেই, শুধুমাত্র তুলির ঘর্ষণের আওয়াজ ছাড়া।

হিরণ মিত্র চিত্রকর, প্রচ্ছদ ও অলংকরণ শিল্পী, শিল্পনির্দেশক (মঞ্চ ও সিনেমা) এবং লেখক।
জীবনস্মৃতি আর্কাইভ ব্লগ
যুগ্ম সম্পাদক : অরিন্দম সাহা সরদার অবেক্ষক এবং সভাপতি, জীবনস্মৃতি আর্কাইভ । বিয়াস ঘোষ সম্পাদক, জীবনস্মৃতি আর্কাইভ ।
প্রধান সহযোগী সম্পাদক : মৌমিতা পাল
সহযোগী সম্পাদক মণ্ডলী : প্রমিতি রায় । অঙ্কুশ দাস । কুণাল গুপ্ত